Skip to content Skip to sidebar Skip to footer

সূরা আসর বাংলা 2024 Free

সূরা আসর তেলাওয়াত, সূরা আসর তেলাওয়াত, সূরা আসর বাংলা অর্থ, সূরা আসর বাংলা, সূরা আল আসর, সুরা আসর, সূরা আসর, সূরা আসর বাংলা উচ্চারণ।
সূরা আসর বাংলা 2024 Free 2

 আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ। আমার দ্বীনী ভাই ও বোনেরা আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়া ও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রিয়  ভাই ও বোনেরা আজ আমি আপনাদের মাঝে নিয়ে আসলাম:- সূরা আসর তেলাওয়াত, সূরা আসর বাংলা অর্থ, সূরা আসর বাংলা, সূরা আল আসর, সুরা আসর, সূরা আসর, সূরা আসর বাংলা উচ্চারণ।

Read More: সুরা আত্তাহিয়াতু 2024 Free

সূরা আসর তেলাওয়াত|সুরা আল আসর / সূরা আসর |

 بِسمِ اللَّهِ الرَّحمٰنِ الرَّحيمِ

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

 শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু

[1]  وَالعَصرِ

[1] অল্ ‘আছ্রি

[1] কসম যুগের (সময়ের),

[2]  إِنَّ الإِنسٰنَ لَفى خُسرٍ

[2]  ইন্নাল্ ইন্সা-না লাফী খুস্রিন্

[2] নিশ্চয় মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত;

[3]  إِلَّا الَّذينَ ءامَنوا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ وَتَواصَوا بِالحَقِّ وَتَواصَوا بِالصَّبرِ

[3] ইল্লাল্লাযীনা আ-মানূ ওয়া ‘আমিলুছ্ ছোয়া -লিহা-তি অতাওয়া- ছোয়াও বিল্ হাককি অ তাওয়া-ছোয়াওবিছ্ ছোয়াব্র্।

[3] কিন্তু তারা নয়, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে তাকীদ করে সত্যের এবং তাকীদ করে সবরের।

সূরা আসর বাংলা অর্থ।  

১) কসম যুগের (সময়ের),

২) নিশ্চয় মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত;

৩) কিন্তু তারা নয়, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে তাকীদ করে সত্যের এবং তাকীদ করে সবরের।

সূরা আসর বাংলা / সূরা আসর বাংলা উচ্চারণ 

১) অল্ ‘আছ্রি

২) ইন্নাল্ ইন্সা-না লাফী খুস্রিন্

৩) ইল্লাল্লাযীনা আ-মানূ ওয়া ‘আমিলুছ্ ছোয়া -লিহা-তি অতাওয়া- ছোয়াও বিল্ হাককি অ তাওয়া-ছোয়াওবিছ্ ছোয়াব্র্।

সূরা আসর

সূরা আসর আরবি বাংলা উচ্চারণ দেখে মুখস্ত করার পর নিচের দেওয়া লিংকে ক্লিক করে অডিও তেলাওয়াত শুনে সূরাটির উচ্চারণ শুদ্ধ করুন।

https://drive.google.com/file/d/152wsAOBLX6VnNMWGAMDOrBDN1FjWEjGh/view?usp=drivesdk

সূরা আসর (আল-আসর)

সূরা আসরের তেলাওয়াত:

সূরা আসরের আয়াতসমূহ:

আয়াত ১:
উচ্চারণ:
ওয়াল আসর।
অর্থ:
শপথ যুগের (সময়ের)।

আয়াত ২:
উচ্চারণ:
ইন্নাল ইনসানা লাফি খুসর।
অর্থ:
নিশ্চয়ই মানুষ ক্ষতির মধ্যে রয়েছে।

আয়াত ৩:
উচ্চারণ:
ইল্লাল্লাযিনা আমানু ওয়া আমিলুস সালিহাতি ওয়া তাওয়াসাও বিল হক্কি ওয়া তাওয়াসাও বিস সবর।
অর্থ:
তবে তারা নয়, যারা ঈমান এনেছে, সৎকর্ম করেছে এবং একে অপরকে সত্য ও ধৈর্যের উপদেশ দিয়েছে।


সূরা আসরের বাংলা অনুবাদ:

সূরা আসর একটি ছোট অথচ গভীর অর্থবহ সূরা। এটি মুসলিমদের জন্য জীবনের মূলনীতি নির্ধারণ করে। আল্লাহ সময়ের কসম খেয়ে মানুষকে সতর্ক করেছেন যে তারা ক্ষতির মধ্যে রয়েছে, যদি না তারা ঈমান আনে, সৎকর্ম করে, এবং একে অপরকে সত্য ও ধৈর্যের উপদেশ দেয়।


সূরা আসর মুসলিমদের জন্য জীবনের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা দেয়, যা সৎ কাজ, ঈমান এবং ধৈর্য অবলম্বন করতে অনুপ্রাণিত করে।

সূরা আল-আসর (সুরা আসর) বিশদ বিশ্লেষণ

সূরা আসরের তেলাওয়াত এবং ব্যাখ্যা:

আয়াত ১:
উচ্চারণ:
وَالْعَصْرِ
বাংলা উচ্চারণ:
ওয়াল-আসর।
অর্থ:
শপথ সময়ের।

ব্যাখ্যা:
আল্লাহ্‌ এখানে সময়ের শপথ করেছেন। সময়কে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে, কারণ সময় মানুষের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই আয়াতে, আল্লাহ্‌ সময়ের গুরুত্ব এবং এর কসম করে মানুষের দুনিয়া ও আখিরাতের প্রতি সতর্ক করেছেন।


আয়াত ২:
উচ্চারণ:
إِنَّ الْإِنسَانَ لَفِي خُسْرٍ
বাংলা উচ্চারণ:
ইন্নাল-ইনসানা লাফি খুসর।
অর্থ:
নিশ্চয়ই মানুষ ক্ষতির মধ্যে রয়েছে।

ব্যাখ্যা:
এই আয়াতে আল্লাহ্‌ মানব জাতির অবস্থা সম্পর্কে একটি সাধারণ বক্তব্য দিয়েছেন, যেখানে মানুষকে জানানো হচ্ছে যে, তারা সময়ের অপচয় ও ভুল পথে পরিচালিত হচ্ছে। ঈমান ও সৎ কাজ ব্যতীত মানুষ ক্ষতির মধ্যে পড়ে।


আয়াত ৩:
উচ্চারণ:
إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ
বাংলা উচ্চারণ:
ইল্লাল্লাযিনা আমানু ওয়া আমিলুস সালিহাতি ওয়া তাওয়াসাও বিল হক্কি ওয়া তাওয়াসাও বিস্‌সাবর।
অর্থ:
তবে তারা নয়, যারা ঈমান এনেছে, সৎকর্ম করেছে এবং একে অপরকে সত্য ও ধৈর্যের উপদেশ দিয়েছে।

ব্যাখ্যা:
আল্লাহ্‌ এখানে ব্যতিক্রম উল্লেখ করেছেন যে, শুধুমাত্র তারা ক্ষতির বাইরে থাকবে যারা ঈমান এনেছে, সৎ কাজ করেছে, এবং একে অপরকে সত্য ও ধৈর্যের উপদেশ দিয়েছে। এই চারটি গুণ মানুষের জীবনকে সঠিক পথে পরিচালিত করে এবং ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে।


সূরা আসরের শিক্ষণীয় দিক:

১. সময়ের মূল্য:
আল্লাহ্‌ সময়ের শপথ করে মানুষকে এর গুরুত্ব বোঝাতে চেয়েছেন। সময় জীবনের একটি অমূল্য সম্পদ যা একবার চলে গেলে আর ফিরে আসে না। তাই সময়কে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে।

  1. মানুষের ক্ষতি:
    মানুষের জীবনের আসল ক্ষতি হলো, যদি সে ঈমান ও সৎকর্ম থেকে দূরে থাকে। ঈমান ছাড়া এবং সৎকর্ম না করলে মানুষ আখিরাতের সফলতা অর্জন করতে পারবে না।
  2. চারটি শর্ত:
    আল্লাহ্‌ এই আয়াতে মানুষকে সফলতার পথে চালিত করতে চারটি শর্ত দিয়েছেন:
  • ঈমান আনা।
  • সৎকর্ম করা।
  • সত্যের পথে অটল থাকা।
  • ধৈর্য অবলম্বন করা।
  1. সত্য এবং ধৈর্যের পরামর্শ:
    মানুষকে শুধু নিজের জন্য সৎ হওয়া নয়, বরং একে অপরকে সত্যের পথে উপদেশ দিতে এবং ধৈর্য ধারণ করতে উৎসাহিত করতে হবে। কঠিন সময়ে ধৈর্য ধরা এবং সঠিক পথে অটল থাকা একজন মুমিনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সূরা আল-আসর – জীবন পরিবর্তনের জন্য নির্দেশিকা:

সূরা আসর আমাদের শেখায় যে, সঠিক জীবনযাপনের মূলনীতি হল সময়কে সঠিকভাবে ব্যবহার করা, ঈমান আনয়ন, সৎকর্মে নিয়োজিত থাকা, এবং একে অপরকে সত্য ও ধৈর্যের শিক্ষা দেওয়া। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে এই নির্দেশনাগুলি অনুসরণ করলে মানুষ দুনিয়া ও আখিরাতে সফল হতে পারবে।

সূরা আল-আসর: আরও গভীর বিশ্লেষণ

সূরা আল-আসর কুরআনের অন্যতম ছোট অথচ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সূরা। এটি মুসলিমদের জীবনধারা ও মানসিকতার মৌলিক দিকগুলো তুলে ধরে। এই সূরা আমাদের মানব জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য সম্পর্কে অত্যন্ত সংক্ষেপে ও স্পষ্টভাবে দিকনির্দেশনা দেয়। এবার আমরা সূরার আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক বিশ্লেষণ করবো:

১. সময়ের শপথ ও গুরুত্ব

সূরা আল-আসর শুরু হয় সময়ের শপথ দিয়ে: “ওয়াল-আসর” (শপথ সময়ের)। কুরআনে আল্লাহ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কিছুর শপথ করেছেন, কিন্তু “আসর” বা সময়ের শপথ নেওয়ার মাধ্যমে সময়ের গুরুত্ব বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়েছে। সময় মানুষের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত মূল্যবান, কারণ একবার চলে গেলে তা আর ফিরে আসে না। তাই সময়কে সঠিকভাবে কাজে লাগানোই জীবনের মূল চাবিকাঠি।

২. মানুষের অবস্থা: ক্ষতির মধ্যে থাকা

আল্লাহ বলেন, “ইন্নাল-ইনসানা লাফি খুসর”“নিশ্চয়ই মানুষ ক্ষতির মধ্যে রয়েছে।”
এখানে মানুষের অবস্থা সম্পর্কে একটি সাধারণ ঘোষণা করা হয়েছে। এটা দেখায় যে, মানব জাতি প্রকৃতির স্বভাবগতভাবেই একটি ক্ষতির পথে রয়েছে। মানুষ সাধারণত সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত হয়, যদি না তারা নিজেকে সঠিকভাবে পরিচালিত করে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সময় নষ্ট, অলসতা, অপ্রয়োজনীয় কাজে জড়িয়ে পড়া প্রায়শই দেখা যায়, যা মানুষের জন্য ক্ষতির কারণ হয়।

৩. ক্ষতির বাইরে: সফলতার চারটি মূলনীতি

আল্লাহ্‌ আয়াত ৩-এ বলেন, মানুষ শুধুমাত্র ক্ষতির বাইরে থাকবে, যদি তারা চারটি মৌলিক গুণাবলী অনুসরণ করে:

  1. ঈমান আনা:
    ঈমান হলো বিশ্বাস, যা একজন মুমিনকে সঠিক পথে চালিত করে। ঈমানের ভিত্তিতে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস, নবীর প্রতি বিশ্বাস এবং আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস থাকা জরুরি।
  2. সৎকর্ম করা:
    শুধু ঈমান আনাই যথেষ্ট নয়, বরং সেই ঈমানের ভিত্তিতে সৎকর্ম করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সৎকর্মের মধ্যে আল্লাহর নির্দেশ পালন করা, পাপ থেকে বিরত থাকা, দয়া ও ন্যায়বিচারের পথে চলা অন্তর্ভুক্ত।
  3. সত্যের উপদেশ:
    মুসলিমরা শুধু নিজেদের সৎ হওয়াই নয়, বরং অন্যদেরকেও সত্যের পথে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। সত্যের উপদেশ দেওয়া মানে হলো ন্যায়, সঠিকতা এবং ইসলামের মূলনীতি মেনে চলতে উৎসাহিত করা।
  4. ধৈর্যের উপদেশ:
    সত্যের পথে চলা সবসময় সহজ নয়। এর জন্য প্রয়োজন ধৈর্য ও সহনশীলতা। জীবনের কঠিন সময়ে, বিপদে, পরীক্ষা ও পেরেশানিতে ধৈর্য ধরে সঠিক পথে অবিচল থাকা অপরিহার্য।

৪. জীবনের দিকনির্দেশনা

সূরা আসর কেবল ইবাদত বা ধর্মীয় দিক থেকে নয়, মানুষের সার্বিক জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এই সূরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের কার্যক্রমে দিকনির্দেশনা দেয়। সময় ব্যবস্থাপনা, জীবনের সঠিক মূল্যায়ন এবং সত্য ও ধৈর্যের উপদেশ – এসব নিয়ম অনুসরণ করে মানুষ শুধু আখিরাতেই নয়, দুনিয়াতেও সফল হতে পারে।


বাস্তব জীবনে সূরা আসরের প্রভাব

  • সময় ব্যবস্থাপনা: সূরা আসর আমাদের শিখায় যে, সময়ের প্রতিটি মুহূর্তকে সঠিকভাবে কাজে লাগানো উচিত। আমাদের দিনযাপন হতে হবে পরিপূর্ণ, এবং সময়ের অপচয় থেকে বাঁচতে হবে।
  • দৈনন্দিন সৎকর্ম: কেবল ঈমান আনলেই যথেষ্ট নয়, বরং আমাদের কাজের মাধ্যমে সেই ঈমানের প্রমাণ দিতে হবে। প্রতিদিন সৎ কাজ, ভালো কাজ এবং ন্যায়বিচারের পথে চলা একান্ত জরুরি।
  • সত্যের পথে অবিচল থাকা: সমাজে, পরিবারে এবং আমাদের চারপাশের মানুষের সাথে সত্যতা ও সততা বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের উচিত অন্যদেরও সত্যের পথে চালিত করা।
  • ধৈর্য ও সহনশীলতা: কঠিন সময়ে, জীবনের চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হতে গেলে ধৈর্য ধারণ করা অপরিহার্য। ধৈর্য আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা বিপদে পড়লে ধৈর্যের সাথে আল্লাহর ওপর আস্থা রাখতে হবে।

উপসংহার

সূরা আসর ছোট আকারের হলেও এর শিক্ষা ও বার্তা গভীর এবং চিরন্তন। এটি আমাদের জীবনের মূলনীতি হিসেবে কাজ করে, যেখানে সময়ের গুরুত্ব, সত্যের প্রতি দৃঢ়তা, ধৈর্যের প্রয়োজনীয়তা এবং সৎকর্মের মাধুর্য সম্পর্কে বিশদভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আল্লাহর পথে চলতে গেলে এই সূরার মূল শিক্ষা আমাদের জীবনকে সুন্দর, অর্থবহ এবং সাফল্যমণ্ডিত করবে।

Leave a comment